মক্কার ৬ মাইল অদূরে অবস্থিত এক গুহার নাম আল-হেরা। ১৪শ বছর পূর্বে যেখানে বেজেছিল সত্য, মানবতার সুর। সে সুরের মূর্ছনায় জাহেলী আরবে ছড়িয়ে পড়েছিল শান্তির বাণী। যাবতীয় অন্ধকার ছিন্ন করে ফুটেছিল সোনালী আলোর আভা। দিনে দিনে সেই আলো ছড়িয়ে পড়েছে সারা দুনিয়ায়। একদিকে বীর মুজাহিদদের ঢাল- তলোয়ারের ঝনঝনানিতে বিস্তৃত হয়েছে ইসলামী সম্রাজ্য। অন্যদিকে ধৈর্য্য, সহিষ্ণুতার অকৃত্রিম পরশ আলো ছড়িয়েছে যালিম-মাযলূম, শত্রু-মিত্র সকলের হৃদয়ে। এর মাঝে কবি-সাহিত্যিকদের বলিষ্ঠ উচ্চারণ আর কলমের কালি প্রভাব ফেলেছে মানসপটে। শিখিয়েছে সাম্য, সম্প্রীতি, মানবতা আর সত্যের অনুসরণই জীবনের প্রকৃত সৌন্দর্য। অভ্রান্ত সত্যের এই চেতনা সূচিত হয়েছে হাসসান বিন সাবিত, আলী বিন আবী তালিব, শেখ সাদীসহ কত ছন্দ রূকারের কাব্যগাথায়। কখনো পাথরে, কখনো কাগজের পাতায়, আবার কখনো সুউচ্চ আওয়াজে বাতাসে ভেসে দিকদিগন্তে ছড়িয়েছে এই শান্তির বাণী। সেই পুরাতন সুর নতুন করে বাংলার অশান্ত মাটিতে বাজিয়েছে ‘আল-হেরা’। ড.মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব স্যারের মাধ্যমে ১৯৯১ সালে শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের ঝঙ্কারি কণ্ঠে শুরু হয় যার পথ চলা। সাথে ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল মান্নান । মৃতপ্রায় সমাজকে জীবিত করতে, বিলুপ্তপ্রায় শান্তির দিশা দিতে যার অবদান অনস্বীকার্য। মুসলিম যুব সমাজ যখন পাশ্চাত্যের অনুসরণে নাস্তিক্য, অশ্লীলতা আর প্রেমকাব্যে ডুবে যাচ্ছিল, তখন ‘আল-হেরা’ সুরে সুরে তুলে ধরে ইসলামের সৌন্দর্য। প্রেম প্রেম খেলা যুবকের বিকৃত চেতনায় জাগ্রত করেছে নারী জাতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। মাদক, ধর্ষণ, খুন, গুম, গুলি বর্ষণ ইত্যাদি সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেমন সোচ্চার হয়েছে, তেমনি দয়া, মমতা আর সেবা, সহযোগিতার প্রতি উৎসাহ যুগিয়েছে। সুরের ঝংকারে সৃষ্টি করেছে নতুন আলোড়ন।